Car Tips 2025: নিজস্ব গাড়ি কেনার স্বপ্ন থাকলেও বাজেটের অভাবে অনেকেই সেটি পূরণ করতে পারেন না। তাই অনেকেই ব্যবহৃত গাড়ি কিনে থাকেন কারণ এক্ষেত্রে গাড়ির দাম নতুন গাড়ির তুলনায় অনেকটাই কম হয়। কিন্তু অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে ব্যবহৃত গাড়ি কেনা কতটা নিরাপদজনক। সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এই সকল গাড়ি বেছে নিতে হয়। বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে সঠিক ব্যবহৃত গাড়ি বেছে নেওয়া উচিত।
Car Tips 2025: গাড়ির এমওটি এবং সার্ভিসিং রেকর্ড পরীক্ষা
যেকোনো ব্যবহৃত গাড়ি কেনার আগে গ্রাহকদের অবশ্যই গাড়িটিকে এমওটি পরীক্ষা করানো উচিত। অনলাইনে সরকার দ্বারা প্রদত্ত ওয়েবসাইটে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখে গাড়ির সম্পূর্ণ তথ্য জেনে নিতে হবে। এই পরীক্ষা দ্বারা প্রাপ্ত পরামর্শ তথ্যগুলিকে ভালো করে দেখে নেওয়া প্রয়োজন। কারণ সকল সমস্যা এমওটি পরীক্ষায় ব্যর্থতার কারণ না হলেও পরবর্তীকালে গাড়ি কেনার পর আপনার সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। গাড়িতে সমস্যা সংক্রান্ত উপদেশ যদি বেশি হয় সেক্ষেত্রে গাড়ির দাম নিয়ে দরদাম করুন। পাশাপাশি গাড়ির পরিষেবা বই পরীক্ষা করা উচিত এবং সেইসাথে পরিষেবার হিসাব সংক্রান্ত সকল রশিদ চাওয়া উচিত।
গাড়ির চাকার পরীক্ষা:
আইন অনুযায়ী প্রতিটি গাড়ির টায়ারে ন্যূনতম ১.৬ মিমি ট্রেড গভীরতা থাকা উচিত। গাড়ির চাকায় কোনরকম কাটা দাগ থাকা উচিত নয়। চাকার ওপর থাকা ট্রেডটিও সমান হওয়া উচিত। অন্যথা এটি চাকার কার্যক্ষমতা হ্রাস করে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে জ্বালানি খরচ হতে পারে।
গাড়ির বডিওয়ার্ক পরিদর্শন:
ব্যবহৃত গাড়ি কেনার পূর্বে গাড়ির প্রতিটি প্যানেলের মধ্যের দূরত্ব সমান থাকা উচিত। এই দূরত্ব সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে বুঝবেন গাড়িটি পূর্বে কোন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। পাশাপাশি প্যানেলগুলির রং মিলছে কিনা সেটিও দেখা প্রয়োজন। কারণ গাড়ি মেরামত করা হলে প্রতিটি অংশের রঙের সাথে মিলিয়ে রং করা খুবই কঠিন। এক্ষেত্রে রং না মিললে গাড়িতে সঙ্ঘাত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।
নিষ্কাশিত নির্গমন রঙ পরীক্ষা:
গাড়ি চালু করার পর যদি সাদা ধোঁয়া নির্গত হয় তবে সেটি স্বাভাবিক। কিন্তু গাড়ি চলার সাথে সাথে ইঞ্জিন গরম হয় এবং এই নিষ্কাশিত ধোঁয়া সূক্ষ্ম হতে থাকে। যদি তার পরিবর্তে গাঢ় হয় তবে সেটি চিন্তার বিষয়। পাশাপাশি ধোঁয়ার রঙের ওপরে নির্ভর করে গাড়ির স্বাস্থ্য। ইঞ্জিন যদি ঠিকভাবে জ্বালানি দহন করতে না পারে সেক্ষেত্রে কালো ধোঁয়া নির্গত হয়। ব্যর্থ সিল অথবা গ্যাসকেটের কারণে ইঞ্জিনের দহন চেম্বারে তেল প্রবেশ করলে নীল ধোঁয়া নির্গত হয়।
ইঞ্জিন তেলের স্তর পরীক্ষা:
প্রাক-মালিকাধীন গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে ইঞ্জিন তেলের স্তর পরীক্ষা করা আবশ্যক। ডিপস্টিকের মাধ্যমে তেলের স্তর পরীক্ষা করে যদি জানতে পারেন তেলের পরিমাণ কম তবে সেটি দুর্বল পরিষেবার কারণ হতে পারে। পাশাপাশি ইঞ্জিন তেলের রং যদি বাদামী না হয়ে কালো হয় তবে বুঝবেন তেলটি বহুদিন পরিবর্তন করা হয়নি। ইঞ্জিন তেলের ক্যাপে যদি চটচটি গাঢ় নোংরাভাব থাকে তবে বুঝতে হবে ইঞ্জিনের কুল্যান্ট তেলের সাথে মিশ্রিত হচ্ছে এবং এটি গাড়ির ব্যর্থতার দিকে নির্দেশ করে।
বৈদ্যুতিক পরীক্ষা এবং আভ্যন্তরীণ পরিদর্শন:
গাড়ির আলো, হর্ন, আসন, এসি, বৈদ্যুতিক জানালা ইত্যাদি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। গাড়ির দরজা বন্ধ করলে যদি ভিতরে স্যাঁতসেঁতে গন্ধ আসে তাহলে ধরে নিতে হবে কোনো অংশ থেকে জল নির্গত হচ্ছে। পাশাপাশি গাড়িতে সমস্ত জরুরি সরঞ্জাম আছে কিনা সেটিও দেখে নিতে হয়। বেশিরভাগ গাড়িতেই স্পেস-সেভার, অতিরিক্ত চাকা এবং জ্যাক থাকে।
এগুলি ছাড়াও গাড়ির সঠিক মাইলেজ, জানালার ফাটল, ইঞ্জিন শুরু ইত্যাদি সঠিকভাবে পরিদর্শন করে নেয়া উচিত। সেইসাথে হ্যান্ডব্রেকের স্থিতিশীলতা, স্টিয়ারিং এবং প্যাডেলের স্পন্দন, পিছলানো ক্লাচ, ইঞ্জিনের শব্দ, ঝাঁঝালো রাইডিং ইত্যাদি বিষয়গুলি গাড়ির মালিকের অনুমতি নিয়ে গাড়িটিকে একবার চালিয়ে দেখে নেওয়া উচিত। রাতের বেলা অথবা বৃষ্টির সময় গাড়ির পর্যবেক্ষণ করা এগিয়ে চলা উচিত। কারণ এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দৃশ্যমান্যতার অভাবে গাড়ির সকল সমস্যা চিহ্নিত করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না।