Car News: ভবিষ্যতে কি জ্বালানি চালিত গাড়িগুলিকে বৈদ্যুতিক গাড়ি পুরোপুরি প্রতিস্থাপিত করতে পারবে?

Car News: গোটা বিশ্বজুড়ে দূষণ এবং সীমিত পরিমান জ্বালানি তেলের কারণে পেট্রোল এবং ডিজেল চালিত গাড়িগুলিকে ধীরে ধীরে বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর পরিবর্তে সেরা বিকল্প হিসেবে বহু দেশ বেছে নিয়েছে বৈদ্যুতিক গাড়িকে। ভারত এবং অন্যান্য বহুদেশ এই কারণে বৈদ্যুতিক গাড়িকে প্রচার করার জন্য বহু সুবিধা প্রদান করে থাকে। তবে বহু মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে এই বৈদ্যুতিক গাড়ি কি পুরোপুরিভাবে জ্বালানি চালিত গাড়িকে প্রতিস্থাপিত করতে সক্ষম হবে?

বাস্তবে এই পরিবর্তন কি আদৌ সম্ভব? এই সম্পর্কে বহু বিশেষজ্ঞরা নিজেদের মতামত পোষণ করেছেন। বহু বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দশকে জ্বালানি চালিত গাড়ির সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেলেও সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা কখনোই সম্ভব না। বিভিন্ন কারণে এই সকল গাড়িগুলি এখনো প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে।

চার্জিং পদ্ধতি:

বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যার কারণ হলো এর চার্জিং পদ্ধতি। বিভিন্ন শহরাঞ্চল এবং মহাসড়কে স্বল্প দূরত্বের মধ্যে পেট্রোল পাম্প খুব সহজেই পাওয়া যায়। কিন্তু সেই তুলনায় বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং স্টেশনের সংখ্যা খুবই কম এবং একটি গাড়িতে সম্পূর্ণ চার্জ করতে প্রচুর সময় ব্যতীত হয়। জ্বালানি চালিত গাড়িতে পেট্রোল এবং ডিজেল ভরতে খুবই কম সময় লাগে সেই তুলনায় একটি বৈদ্যুতিক গাড়িকে সম্পূর্ণ চার্জ করতে প্রায় কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। যদিও বর্তমানে দ্রুত চার্জিং পদ্ধতি যুক্ত গাড়ি বাজারে আনা হচ্ছে তবুও প্রতিটি চার্জিং স্টেশনে এই প্রযুক্তি এখনো উপলব্ধ নয়। সেই সাথে অতিরিক্ত ঠান্ডা কিংবা গরম অঞ্চল ব্যাটারির কার্যক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলে এবং গাড়ির পরিসর হ্রাস করে।

পরিসর:

পেট্রোল অথবা ডিজেল চালিত গাড়ির তুলনায় বৈদ্যুতিক গাড়ির পরিসর মাত্রা খুবই কম। দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রমের ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক গাড়িকে ঘন ঘন চার্জ করার প্রয়োজন পরে। এছাড়া উচ্চ পরিসরের বৈদ্যুতিক গাড়ির মূল্য খুবই বেশি। সাধারণ মানুষের জন্য সেই সকল গাড়ি খুবই ব্যয়বহুল। অন্যদিকে ট্রাক, বাস এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক যানবাহনগুলির ক্ষেত্রে উন্নত ব্যাটারি প্রযুক্তির অভাবের ফলে এই সকল যানবাহনগুলি এখনো পেট্রোল এবং ডিজেলের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

Read More: Hyundi Venue: নতুন গাড়ি চালকদের জন্য কোনটি সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য হুন্ডাই ভেন্যু না সিট্রোয়েন সি৩

অধিক মূল্য:

বৈদ্যুতিক যানবাহন গ্রহণের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো এর মূল্য। জ্বালানি চালিত যানবাহনের তুলনায় বৈদ্যুতিক যানবাহনের প্রাথমিক খরচ অত্যন্ত বেশি। সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন প্রণোদনা এবং ভর্তুকি ব্যবস্থা প্রদান করা হলেও সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে এই সকল গাড়ি খুবই ব্যয়বহুল হয়ে পরে। এছাড়াও সময়ের সাথে সাথে ইভির ব্যাটারি ক্ষমতা হ্রাস পায় ফলে উন্নত মানের ব্যাটারির মূল্য এবং ব্যাটারির সীমিত জীবনকাল এই ধরনের গাড়িগুলির একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা।

পরিবেশ দূষণ:

বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্ষেত্রে এর ব্যাটারি পরিবেশের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলে। এই ধরনের যানবাহন চলাচলের সময় পরিবেশের ওপর কোনো প্রভাব না ফেললেও এদের ব্যাটারি নির্মাণ এবং ব্যাটারির পুনর্ব্যবহার পরিবেশের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ব্যাটারির নিরাপদ নিষ্কাশন না হলে এটি পরিবেশ দূষণের দিকে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

হাইব্রিড এবং বিকল্প জ্বালানি চালিত যানবাহন:

ভবিষ্যতে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহার বৃদ্ধি পেলেও সম্পূর্ণরূপে স্থানান্তরিত হতে প্রচুর সময় লাগবে। বর্তমানে পেট্রোল এবং ডিজেল চালিত গাড়ির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে তবে এর পরিবর্তে বিভিন্ন হাইব্রিড এবং সিএনজি যানবাহনগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি প্রযুক্তি, চার্জিং নেটওয়ার্ক এবং উৎপাদন খরচ উন্নত হলে এর মূল্য হ্রাস এবং ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিকল্প জ্বালানি চালিত যানবাহনের কারণে পুরোপুরি প্রতিস্থাপিত হতে পারবে কিনা সেক্ষেত্রে এখনো প্রশ্ন থেকে যায়।

About Author

Leave a Comment